Post Bottom Ad

Untitled-1.png

সাম্প্রতিক লেখা

কবিতাজীবন ও কবি : সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ


সাধারণ মানুষের জীবন  জাগতিক যে অভিজ্ঞ 
আছে। কবিদেরও সেটা আছে। সাধারণ মানুষের জীবন  জাগতিক যে সকল অভিজ্ঞতা নেই সেটাও কবিদের আছে। কবিদের কাছে জীবনের সাধারণ জ্ঞানের সাথে সাথে আত্মার সকল উপাদানের অভিজ্ঞতা অর্জিত হয় অনুভূতির মাধ্যমে। তাঁর গতিময় সৃজনশীলতার প্রতিবন্ধকতা গুলোকে সরিয়ে দিয়ে সৃষ্টি করেন সুন্দর আর সংহতির সাবলীল ভারসাম্য। প্রদান করেন শাশ্বত অনুভূতির উপলব্ধি। তাঁর চিন্তাধারাকেজীবনবোধকেঅস্তিত্বের সংরাগকে অভিনবত্বের উপস্থাপনায় তুলে ধরণ সত্যের সৌকার্য  অনুভীত শৈলীর সুক্ষ্মতায়। দর্শনের দীপ্তীময়তা আর নান্দনিক অম্লান অর্ঘ্য দিয়ে নির্মাণ করেন বোধের মন্দির। স্রষ্টার আসনে বসে স্বকীয় অনুভবের জীবনবোধের দর্শনে কথা বলছেন অথচ বলছেন সকল মানুষের মনের কথা যা আত্মাকে সমৃদ্ধ করে পাশাপাশি সুউচ্চ আদর্শের পথে এগোবার নির্দেশনা দান করেন
একমাত্র কবিই জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক

সে সকল কাল এবং অস্তিত্বের দ্রষ্টা তাঁর পক্ষে সাধারণ মানবিক-জাগতিক জীবনকে শুধুমাত্র উপলব্ধিত উপকরণ ছাড়া অন্য কোন গুরুত্ব বহন নাও করতে পারেন

সে সমগ্র সত্যের প্রেমিক

জ্ঞানের প্রতি প্রেমজীবনের প্রতি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিযা তাকে শাশ্বত সত্যের আলোর নির্দেশনা দেবে। যে আলোতে কোন অন্ধকারের আশাংকা নেই। কবি কোনক্রমে অসত্যকে গ্রহণ করবেন না। সে অবশ্যই সংযমী  উচ্চাকাঙ্ক্ষী হবে। আত্মার যে শক্তিতে অস্তিত্বের জীবনেরঅনুভূতির। আচরণেরশ্বাশ্বত্য সত্যের যথার্থ সত্য অনুধাবন করা সম্ভব। যে শক্তি অনুভীত অস্তিত্বের নৈকট্যে এবং সাদৃশ্যে ভাস্বরজীবনবোধের সম্মেলনে প্রজ্ঞা এবং যথার্থতার জন্মদান করেসে শক্তি অনুভীত উপলব্ধির সম্যক সন্ধানী যতক্ষণ না পর্যন্ত সকল অস্তিত্বের মূলক উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় ততক্ষণ সে শক্তি তথা কবির অন্বেষীত অনুভবের বিরাম নেই। তৃপ্ত হয় না সে শক্তি

কবিরা উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে আমাদের সুক্ষ্মগতির অন্বেষণ করেন।  চরিত্রে মহৎ আত্মকরণ থাকবে। এই মহৎ আত্মকরণ নিয়ে সে সকল অস্তিত্বের সন্ধানে নিয়োজিত হবে

কবিত্বের প্রধান লক্ষ্য শুধু কবিতা চর্চা নয়। অনুভূতির সম্পূর্ণতা অর্জনের চেষ্টা করা। প্রত্যেক সত্তার মধ্যে উত্তম এবং অধমের অস্তিত্ব রয়েছে। স্বভাবতই কবিদের পাশাপাশি -কবিদের অস্তিত্ব থাকবে। এটাই সার্বজনীন

প্রকৃত কবি সেই যে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের অস্তিত্বের সত্তাকে উপলব্ধিত করতে সক্ষম। যার জীবনবোধের অনুভীত অভিজ্ঞতা নেই সে প্রকৃত কাব্যচর্চা করতে অক্ষম। এই অক্ষমতার অনুপাতে আর যাই হোক সে কবি হতে পারে না। এটা যতখানি উপলব্ধিত ততখানি অস্তিত্বগত  স্বর্গীয় সহায়তা প্রাপ্ত। স্বর্গীয় সহায়তা একমাত্র ঈশ্বরের মনোনীত ব্যক্তিগণের উপর ন্যাস্ত হয়। মানুষের এই ক্ষুদ্র জীবনে এটাকে পুরোপুরি আত্মস্থ করা একমাত্র অলৌকিক সহযোগিতা ছাড়া প্রায় -সম্ভব। এমন কিছু ব্যক্তি এমন লক্ষকে সাধন করতে চায়যে লক্ষ্য তাদের সাধ্যের উধের্্ব। ফলে সংখ্যাহীন অসঙ্গতীর কলঙ্ক লেপন করে। সার্বজনীন নিন্দার পাত্র করে তোলে পুরো কবি সমাজটাকে। এই -কবিদের ভিড়ে প্রকৃত কবিগণ নীরব এবং নি:সঙ্গ জীবন যাপন করে। কামনা করে -কবিত্বের সস্তা ফাঁদের স্রোতে ভেসে না যান। জাগতিক ঐন্দ্রজালের স্পর্শ শূন্য হয়ে জীবন উপভোগ  ধারণ করেননিজস্ব নিয়মে

আর তাই তাঁরা উপলব্ধি করতে পারেন অনুভূতির পূর্ণাঙ্গ পাঠে মুল সত্যের অন্বেষণে। তাঁরা মানুষের মত জীবনকে আচরণকে বিন্যস্ত করবেন নাজড়িত করতে চাইবেন না নিজেদেরকে এতে বিস্মিত হবার কিছু নেই

প্রকৃত কবিগণ জাগতিক জড়তার শৃঙ্খল মুক্ত স্বশাসিতকৌতূহলীক্ষেত্র বিশেষে উদ্বেগহীন এবং প্রশ্নবিদ্ধ এক নিজস্ব জগতের মধ্যে বসবাস করে। নিজের প্রয়োজনমত এর নির্মাণ  পুননির্মাণ করেন। অচঞ্চল মূল্যবোধে আস্থার গভীর সুর তাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়। তারা নিজেরাই নিজেদের ভাগ্যের নিয়ন্তা হয়ে ওঠেন অনন্ত কোন কোন ক্ষেত্রে

সব কবিরই একই নিজস্ব যুগ রয়েছে

রয়েছে নিজস্ব কিছু রীতিকিছু উদ্ভাবনী আর কিছু নির্দেশনা। সমকাল হচ্ছে সর্বদাই দুর্বোধ্য যুগ। প্রকৃত কবিরা চিন্তাররাজ্য নিয়ন্ত্রণে চিৎকার করেনঘৃণা করেনতাঁরা লালন করেন নিজস্ব একান্ত জীবন থেকে নেওয়া অনুভীত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান নতুন আবিষ্কারেরবিচারেরপ্রগতিরপরবাস্তবতারলৌকিকতারআধ্যত্ম অনুসন্ধানের ধ্বংসের। সৃষ্টির সুর ধ্বনিত হয় তাদের কবিতায়। জীবন  কবিতার সমন্বিত অনুভবের উপলব্ধিহীন কবিকে কতটুকু আসলে কবি বলা যায়। যেখানে তারা বিবর্তনের নিষ্ক্রিয়তার জন্য উন্মুখপরাজয়ে পরিতৃপ্তীনিস্পৃহাদার্শনিক আরাধনায় ঔদাসীন্য সহ প্রভৃত আচরণদ্বারা নিজেদের বাঁচাতে সর্বদা প্রচলিত নিয়মে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। নিজেদের সন্তুষ্টির জন্য মনস্ততত্তের্ব বিমূর্তয়ান ঘটায়। আর এদের ভিড়ে প্রকৃত কবিগণ অদ্ভুতরহস্যময় আর অপরিচিত হয়ে উঠছেন। এই রহস্যময়তা বা অস্বাভাবিকত্বের মূল যাই হোক না কেন এই হালের প্রদর্শনী প্রক্রিয়ায় এর স্থায়িত্ব সাময়িক কারণ প্রকৃত পাঠক কখন  কখন দ্বীধাগ্রস্থ হয়ে পড়লেও কালের সন্ধিক্ষণে এসব ধোপে টিকবেনা। দ্বীধাগ্রস্থহীন এই সময়টা "ভয়ঙ্কর অস্বাভাবিকত্বরূপে জীবনবোধের অন্তর্দৃষ্টি কামনা করে। বর্তমান কালের প্রধান সুর বলে সাধারণত স্বীকৃত  পরিচিত এই অস্বাভাবিকত্ব এবং অচেনার অনুভূতির সঙ্গে যে বিভ্রান্তিনৈরাশ্য এবং টানাপোড়ন অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত তার সাথে

কোন মন্তব্য নেই:

Comments System

blogger/disqus/facebook

Disqus Shortname

stullah